ভারতের মুসলমানদের সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপকারী ওয়াকফ বিল সম্প্রতি পাস হওয়ার পর কেরালায় শুরু হয়েছে তীব্র আন্দোলন। জামায়াতে ইসলামী ভাবাদর্শের ছাত্রী সংগঠন GIO (Girls’ Islamic Organization) এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে এবং প্রতিবাদ জানাতে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এই আন্দোলনটি কেবল একটি আইনি বিষয় নয়, বরং এটি মুসলমান সমাজের অধিকার ও সম্পত্তি রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ওয়াকফ বিলটি মূলত মুসলিম ধর্মের তত্ত্বাবধানাধীন সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য পাস করা হয়েছিল। এই বিলের মাধ্যমে সরকারের উদ্দেশ্য ছিল, মুসলমানদের ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধান আরো কার্যকরী করা। কিন্তু এই বিলের পেছনে যে উদ্দেশ্য রয়েছে, তা নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুসলিম সমাজের নেতৃবৃন্দ। তাদের মতে, এই বিল মুসলমানদের সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপের একটি রাস্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামী ভাবাদর্শের ছাত্রী সংগঠন GIO’র সদস্যরা এই বিলের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে মুসলমানদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা এবং নিজেদের অধিকার রক্ষার জন্য সংগঠিত হওয়া। GIO’র নেত্রীরা জানিয়েছেন, এই আন্দোলন শুধুমাত্র একটি বিক্ষোভ নয়, বরং এটি মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ হিসেবে কাজ করবে।
GIO’র নেতৃবৃন্দের মতে, ওয়াকফ বিলের মাধ্যমে যে হস্তক্ষেপের চেষ্টা চলছে, তা মুসলমানদের নিজস্ব সম্পত্তির উপর রাষ্ট্রীয় পরিদর্শনের সূচনা করবে। তারা মনে করেন, এতে মুসলমানদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি ক্ষুণ্ণ হতে পারে। এই বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মূল কারণগুলো হলো:
নিজস্ব সম্পত্তির অধিকার: মুসলমানদের ওয়াকফ সম্পত্তির উপর সরকারী হস্তক্ষেপ মুসলমানদের মৌলিক অধিকারকে লঙ্ঘন করে।
ধর্মীয় স্বাধীনতা: বিলটি ধর্মীয় স্বাধীনতা ও নিজেদের সম্পত্তির উপর নিয়ন্ত্রণের অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে।
সামাজিক শান্তি ও সহনশীলতা: এই বিলের ফলে সমাজে বিভেদ সৃষ্টি হতে পারে, যা সামাজিক শান্তি ও সহনশীলতাকে বিঘ্নিত করবে।
GIO’র সদস্যরা তাদের আন্দোলনকে সফল করার জন্য নানা ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
সচেনতা সভা: বিভিন্ন অঞ্চলে সচেনতা সভা আয়োজন করে মুসলিম সমাজের সদস্যদের এই বিল সম্পর্কে অবহিত করা হচ্ছে।
পেটিশন সংগ্রহ: মুসলমানদের মধ্যে পেটিশন সংগ্রহ করা হচ্ছে, যাতে সরকারের কাছে তাদের দাবী তুলে ধরা যায়।
বিক্ষোভ মিছিল: বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করা হয়েছে, যাতে আন্দোলনের আওয়াজ আরও জোরালোভাবে পৌঁছাতে পারে।
অভিযানটির ফলে কেরালার মুসলিম সমাজে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। সাধারণ মুসলিম জনগণ এবং বিভিন্ন সংগঠন এই আন্দোলনে সমর্থন জানাচ্ছেন। বিশেষ করে যুবক ও ছাত্ররা এই আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন, যা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হয়ে উঠেছে।