চট্টগ্রাম: আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ভারতে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঢাকায় ফেরানোর দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। দলীয়ভাবে নেতাকর্মী-সমর্থকদের ঢাকায় সমবেত হতে বলা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই কথাটি ছড়িয়ে পড়েছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
সম্প্রতি গোয়েন্দা পুলিশের একটি গোপন রিপোর্টে এমন তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রামের সব থানাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
গোয়েন্দাদের ধারণা, পতিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজধানীতে অস্থিরতা তৈরির পরিকল্পনা করছেন কিংবা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরাতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শক্তি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে তারা ঢাকায় সমবেত হওয়ার চেষ্টা করছেন। এই প্রেক্ষাপটে নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় সতর্ক অবস্থানে পুলিশ প্রশাসন।
সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গত ৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিএসবি) থেকে সব থানায় একটি চিঠি পাঠানো হয়। এতে অস্থির পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ সদস্যদের জন্য ৮ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নির্দেশনাগুলো হলো — সন্দেহভাজনদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ, যাদের নামে মামলা আছে তাদের মোবাইলফোন
ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো, নৌঘাট, রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে নজরদারি বাড়ানো, বিএনপি ও জামায়াতপন্থি স্থানীয় নেতাদের সহায়তায় ঢাকামুখী যাত্রা প্রতিহত করা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি করে উসকানিদাতাদের শনাক্তকরণ, অর্থদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, ভাড়ায়চালিত গাড়ি ও স্ট্যান্ডগুলোর ওপর নজর রাখা।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মাহমুদা বেগম বলেন, ‘নগরীতে নাইট পেট্রোল, নতুন নতুন চেকপোস্ট এবং মিনি টিম গঠন করে কাজ করা হচ্ছে। যেসব এলাকা অস্থিরতার ঝুঁকিতে আছে, সেখানে বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
তবে সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেওয়া নির্দিষ্ট কোনো চিঠির বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য দেননি চট্টগ্রাম জেলা ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জুনায়েদ কাউছার। তিনি বলেন, ‘হুমকি বা গুজব পেলে আমরা নিয়মমাফিক প্রস্তুতি নিই, যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না ঘটে। পুলিশ সবসময় সচেতন ও সতর্ক রয়েছে। ’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর চট্টগ্রামে সহিংসতা, দখল, সংঘর্ষ ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ডে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। একদিকে রাজনৈতিক শূন্যতা, অন্যদিকে পুলিশের দুর্বল মনোবলের সুযোগে এসব অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৫